আবার কি তবে যুদ্ধ (Greece Turkey War) হবে! ইউরোপে ফের ঘনাচ্ছে আসন্ন যুদ্ধের (Greece Turkey War) কালো মেঘ! রাশিয়া ইউক্রেনের পর এবার গ্রিস ও তুরস্ক (Greece Turkey War)! পূর্ব ভূমধ্যসাগরের দ্বীপপুঞ্জকে কেন্দ্র করে দুই দেশের বিবাদ ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। সেই বিবাদের আঁচ পড়ছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও। সেই সঙ্গে পরিবর্তিত আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে ভারতের অবস্থান নিয়েও তৈরি হচ্ছে কৌতূহল।
নেটো তালিকাভুক্ত দুই দেশ গ্রিস আর তুরস্কের বিবাদ নতুন নয়। পূর্ব ভূমধ্যসাগরের দ্বীপপুঞ্জগুলিকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন বিবাদ তাদের। ১৯২৩ সালে লুসানের চুক্তি অনুযায়ী, গ্রিস আর তুরস্কের বর্তমান সীমান্ত নির্ধারিত হয়েছিল৷ গ্রিসের অভিযোগ, সেই চুক্তির ফলে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন লেসবস, চিওস, সামোসের উপর দিয়ে চুক্তি লঙ্ঘন করে তুরস্ক যুদ্ধবিমান চালাচ্ছে। অন্যদিকে তুরস্কের অভিযোগ, তুরস্কের পশ্চিম উপকূলে সেনা মোতায়েন করেছে গ্রিস৷ ১৯৪৭ সালের প্যারিস শান্তি চুক্তি অনুযায়ী, গ্রিস বা তুরস্ক একে অপরের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনও দ্বীপ বা দ্বীপপুঞ্জে সেনা মোতায়েন করতে পারে না।
অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়ে লেসবস দ্বীপে তুরস্কের একটি পণ্যবাহী জাহাজকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে গ্রিসের নৌসেনার বিরুদ্ধে৷ গ্রিসের দাবি, জাহাজের গতিবিধি সন্দেহজনক ছিল এবং জাহাজের নাবিক জাহাজটি পরিদর্শনের দাবিকে মান্যতা দেননি। ভূমধ্যসাগরীয় পূর্বাঞ্চলের সামুদ্রিক সম্পদ নিয়েও বিবাদ তৈরি হয়েছে দুই দেশে। ২০১৯ সালে তুরস্ক আর লিবিয়ার মধ্যে সামুদ্রিক চুক্তি হয় যে, ভূমধ্যসাগরের প্রাকৃতিক সম্পদ তুরস্কের দক্ষিণ উপকূল আর লিবিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূল অঞ্চল মিলিত ভাবে ব্যবহার করতে পারবে। গ্রিসের দাবি, ঐ দুই দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের একটি দ্বীপ রয়েছে৷ এই চুক্তির ফলে তাদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন হচ্ছে বলেও অভিযোগ এনেছে গ্রিস। আবার তুরস্কের অভিযোগ, গ্রিস আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে এবং তাদের বিমানগুলিকে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে বাধা দিচ্ছে।
ভূমধ্যসাগরের ঐ বিতর্কিত অঞ্চল আন্তর্দেশীয় বাণিজ্যের জন্য বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ৷ অন্যদিকে গ্রিস, তুরস্ক দুই দেশই নেটোর সদস্য৷ ফলে বিবাদকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির আশঙ্কায় প্রমাদগুণছে আন্তর্জাতিক মহল। দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে ভারতের অর্থনীতি এবং বাণিজ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কার সাউথ ব্লকও। চলতি বছরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী মিটসোটাকিস। তুরস্ক ও গ্রিসের যুদ্ধ বাঁধলে ভারতের অবস্থান কি হবে তা নিয়েও জল্পনা চলছে। মনে করা হচ্ছে, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের মতোই এক্ষেত্রেও নিরপেক্ষ অবস্থান নেবে ভারত।