রাজীব ঘোষ: লোকসভা, বিধানসভার উপনির্বাচনে একেবারে ভরাডুবি হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। বাংলায় লোকসভা ভোটে এবার ৩০ টি আসনের টার্গেট করে জোরদার প্রচার চালিয়ে গেলেও সাকুল্যে বিজেপির(BJP) দখলে এসেছে ১২টি আসন। ২০১৯ সালে জেতা ১৮টি আসনের মধ্যে ৬টি আসন হারাতে হয়েছে। আর উপনির্বাচনের কথা তো আর বলার মত জায়গায় নেই। যেখানে ৩টি কেন্দ্রই একুশের নির্বাচনে দখলে ছিল বিজেপির, এমনকি লোকসভা নির্বাচনেও এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রে লিড ছিল পদ্ম শিবিরের, সেই তিনটি কেন্দ্রেও হার হয়েছে। চারটি কেন্দ্রই জিতে নিয়েছে তৃণমূল।
আর এর পরেই দলের অন্দরে রাজ্য সভাপতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদাধিকারীরা একে অপরকে তাদের কৃতকর্মের জন্য দুষতে শুরু করেছেন। এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumdar) নাম না করে শুভেন্দুকেই এই পরিস্থিতির জন্য দোষারোপ করলেন বলেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচি, মিটিং থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে(Suvendu Adhikari) দেখা যেত, কবে সিবিআই কোথায় হানা দেবে, ইডি কাকে গ্রেপ্তার করবে, সেই বিষয়টির আভাস তিনি আগে ভাগে দিয়ে দিতেন। আর তার এই আভাস দেওয়াকে নিয়েই তৃণমূলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়। রাজনৈতিক স্বার্থে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোকে ব্যবহার করছে বিজেপি। এবার তৃণমূলের কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেল সুকান্ত মজুমদারের মুখে।
সুকান্ত বললেন, অনেকেই বলেন, দাদা সিবিআইকে বলুন। ওকে জেলে ঢুকিয়ে দিন। ওকে গ্রেপ্তার করলেই আমরা জিতে যাব। এইসব করে কখনো জয় আসেনা। হিন্দমোটরের একটি সভায় বিজেপির এই ভরাডুবি নিয়ে বলতে গিয়ে সুকান্ত বলেন, দাদা, সিবিআইকে বলুন। জেলে ঢুকিয়ে দিলে জিতে যাব। এভাবে জয় কখনোই আসতে পারে না। আপনি পরিশ্রম করে যদি সংগঠন তৈরি করতে পারেন, তাহলেই জিতবেন। আর তা যদি না পারেন, কোনোদিন জিতবেন না। সিবিআই, ইডি দেখিয়ে ভোটে জয় আসেনা।
আরও পড়ুনঃ জরাজীর্ণ স্কুল ভবন ভাঙার আশঙ্কায় আদিবাসী গ্রাম, বিহিত চাইতে ডিএম অফিসে বিক্ষোভ পড়ুয়া ও অভিভাবকদের
এর আগের দিন দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন সুকান্ত। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থেকে বলতে শোনা যায়, হুগলি বিজেপিতে যারা মন্ডল সভাপতি রয়েছেন তারা দলের বিরুদ্ধে কাজ করেন। সেই কারণেই আমরা হেরে গিয়েছি। অবশ্য পরবর্তীতে হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি এই বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তার কথায়, যিনি অভিযোগ তুলছেন তিনি দলের কেউ নন। তবে সুকান্ত এই মন্তব্য করলেও তিনি হতাশ নন। উপনির্বাচনের রায় শাসকদলের পক্ষেই যায় বলে তিনি মন্তব্য করেন। ২০২৬ সালের বিধানসভায় ওই ৪টি কেন্দ্রে বিজেপির ফল অন্যরকম হবে বলে ঘোষণা করেন তিনি।