রাজীব ঘোষ: সবে প্রায় এক মাসের একটু বেশি সময় কেটে গিয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ১২টি আসন জয়লাভ করেছে গেরুয়া শিবির। অর্থাৎ ২০১৯ সালের ১৮ টি আসন সংখ্যাও ধরে রাখতে পারেনি। আবার ওদিকে বাংলার শাসক তৃণমূল আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে ২৯ টি আসন দখল করে নিয়েছে। লোকসভা ভোট শেষ হতে না হতেই ঢাকে কাঠি পড়েছে ৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনের।রাজনৈতিক লড়াই জোরদার শুরু হয়েছে। আর এর মধ্যে মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনী ময়দান একেবারে সরগরম হয়ে উঠেছে। তৃণমূল প্রার্থী সুপ্তি পান্ডে, তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিজেপির কল্যান চৌবে। এবার বিজেপির কল্যাণ চৌবে(Kalyan Chaubey) তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষকে(Kunal Ghosh) টেলিফোন করে পদের টোপ দিয়েছেন বলে দাবি করলেন স্বয়ং কুণাল। একটি সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল জানান, গত রবিবার ৭ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার সময় মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে ফোন করে আমাকে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করেন। ঘুষের অর্থ হল, তার হয়ে কাজ করলে ক্রীড়া জগতে রাজ্য বা জাতীয় স্তরে তাকে বড় পদ দেওয়া হতে পারে। যদিও এই টেলিফোনিক কথোপকথনের সত্যতা GNE Bangla যাচাই করে নি।
আরও পড়ুনঃ বর্ষায় নিকাশি নালার আবর্জনা তুলে ফেলা হচ্ছে রাস্তার ধারে, ক্ষোভ এলাকাবাসীর
এই প্রসঙ্গে কুণাল সেই প্রেস কনফারেন্সে আরো বলেন, মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী সুপ্তি পান্ডের জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা। আর বিজেপি হেরে যাবে বুঝেই এখন আমাকে ফোন করে পদের টোপ দিচ্ছে, প্রলোভন দেখাচ্ছে। বিজেপির মানসিকতা এরকম। ওদের এতটাই নোংরা মানসিকতা দলের সঙ্গে বেইমানি করার প্রস্তাব দিচ্ছে আমাকে। এখানেই শেষ করেননি কুণাল। তিনি আরো বলেন, টেলিফোনিক কথোপকথনের যে রেকর্ডিং তার আংশিকটা আজকে প্রকাশ করছি। পরবর্তীতে বাকিটা প্রকাশ করব। এবার কুণাল বনাম কল্যাণের এই টেলিফোনিক কথোপকথনের ভাইরাল অডিও ঘিরে রাজ্যজুড়ে রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কুণাল এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে লিখেছেন,ভোটে সাহায্যের বিনিময়ে পদের টোপ দিচ্ছে বিজেপি(BJP)।এছাড়াও তিনি কল্যাণের সম্পর্কে টেলিফোনিক অডিও পুরো প্রকাশ করার কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, মানিকতলার বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে এর আগের বারও মানিকতলা কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গিয়েছিলেন। তারপরে তিনি আদালতে মামলা করেন। কল্যান চৌবে ক্রীড়া জগতের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। কুণালের কথায়, তিনি আই এফ এর সভাপতি। জীবনে বহু ঝড়জল হয়ে যাবার পরে কেন্দ্রীয় সরকার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেছি। এই বিষয়ে বিজেপির কল্যাণ চৌবে বলেন, কুণালকে কোনো ঘুষের প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। তার রেকর্ডিংয়ে এডিট করে বক্তব্যকে বিকৃত করা হয়েছে। কল্যাণের কথায়, একজন প্রার্থী হিসেবে সবার কাছেই সাহায্য চাওয়া যেতে পারে। কোনো ঘুষের প্রস্তাব দিইনি। পাশাপাশি, কুণাল ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগদান করতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করেন কল্যাণ। এবার ১০ জুলাই নির্বাচনের একেবারে শেষ প্রচার লগ্নে এসে কুণাল বনাম কল্যাণের এই বাকযুদ্ধ মানিকতলা কেন্দ্রের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কতখানি প্রভাব ফেলতে পারে, সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।