‘নেট’ এবং ‘নিট’ (NEET-NET) পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে আলোচনা যখন তুঙ্গে, তখন পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নয়া আইন আনলো কেন্দ্রীয় সরকার। প্রশ্ন ফাঁস ও দুর্নীতি রুখতে কড়া শাস্তির বিধান দেওয়া হয়েছে এই নতুন আইনে।
সর্বভারতীয় স্তরে তিনটি গুরত্বপূর্ণ পরীক্ষায় পরপর ব্যর্থতার কারণে সমালোচনার ঝড় সামলাতে প্রায় হিমশিম খাচ্ছে সদ্য গঠিত এনডিএ জোট সরকার। এরই মধ্যে আবার সিবিআই প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে, একদিন নয় বরং আটচল্লিশ ঘন্টা আগে অর্থাৎ রবিবারেই ফাঁস হয়েছে ইউজিসি-নেটের প্রশ্ন। প্রথমে ইন্টারনেটের ডার্ক ওয়েব এবং তারপরেই টেলিগ্রামের মত বহুল প্রচলিত সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরতে থাকে ‘নেট’-এর প্রশ্নপত্র। বুধবার রাত থেকে দফায় দফায় বিরোধী শিবিরের আক্রমণের শিকার হয় কেন্দ্রীয় সরকার। কেউ কেউ তো আবার সরাসরি কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের ইস্তফা দাবি করেছেন। এই প্রথমবার এবিভিপি-কেও সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামতে দেখা গেছে। এই কটাক্ষের মাঝেই কেন্দ্র নিয়ে এল ‘পাবলিক এগজামিনেশন ( প্রিভেনশন অব আনফেয়ার মিনস) অ্যাক্ট’। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসেই এই আইন পাস হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে এবং আগামী জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকেই আইনটি কার্যকরী করা হতে চলেছে।
উল্লিখিত আইনে বলা হয়েছে,
১। যদি কোন একক বা একাধিক ব্যক্তি প্রশ্ন ফাঁস করতে গিয়ে ধরা পড়ে, তবে তার কমপক্ষে ৩ বছরের জন্য হাজত বাস নিশ্চিত এবং এছাড়াও হতে পারে ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানাও।
২। যদি কোন পরীক্ষা আয়োজক সংস্থা জালিয়াতির বা পরীক্ষায় নকলের খবর পেয়েও ঘটনাটি প্রকাশ্যে না আনে, তাহলে সেই সংস্থার ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে।
৩। তদন্তের সময় যদি কোন আধিকারিকের নাম সামনে আসে এবং যদি পরবর্তী সময়ে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন তবে কমপক্ষে ৫ বছর এবং সর্বাধিক ১০ বছরের কারাদন্ড হতে পারে।
৪। যদি কোন পরীক্ষার আয়োজক সংস্থার বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণিত হয়, তবে তাদের ১ কোটি টাকা জরিমানা হতে পারে এবং হতে পারে ৫ থেকে ১০ বছরের জেল।
৫। জাতীয় ন্যায় সংহিতায় উল্লেখ থাকলেও ভারতীয় সকল দন্ডবিধির ধারাগুলিই এক্ষেত্রে কার্যকরী হবে বলে জানানো হয়েছে। ন্যায় সংহিতা চালু না হওয়া পর্যন্ত আইনের ক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধি প্রযোজ্য হবে।