স্বপ্নীল মজুমদার (ঝাড়গ্রাম): সঙ্ঘের প্রচার ছিল ভোট নষ্ট করবেন না। ঝাড়গ্রাম (Jhargram) লোকসভায় এবার বিজেপি হারলেও গত বারের তুলনায় নোটার হার কমল। সঙ্ঘ সূত্রের দাবি, ২০১৪ সাল থেকে জোরদার প্রচারের ফলে ক্রমে ভোটদানের হার বাড়ছে। তবে বিজেপির হারের কারণ নিয়েও সঙ্ঘের অন্দরে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে নোটায় ২২,৯৩৫টি ভোট পড়েছিল। অর্থাৎ ১.৮২% ভোটার কোনও প্রার্থীকেই পছন্দ করেননি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছিল ১৭,৬৯২টি (১.২৬%)। এবার তৃণমূল প্রার্থী কালীপদ সরেন ১ লক্ষ ৭৪ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থী প্রণত টুডুকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন। এবার নোটায় ১৫,৯২০টি ভোট পড়েছে (১.০৭%)। নোটায় ভোট পড়ার হার কমার বিষয়টি তাদের প্রচারের অন্যতম ফল বলেই মনে করছে সঙ্ঘ। কারণ গত চার মাস ধরে সঙ্ঘের জাগরণ কর্মসূচিতে ভোটারদের উদ্দেশ্যে ছ’টি আয়ামের প্রতিনিধিরা যোগ্য প্রার্থীকে একশো শতাংশ ভোটদানের সম্পর্কে সচেতন করেছিলেন। সঙ্ঘের এক প্রমুখ বলছেন, ‘‘জাগরণ কর্মসূচিতে আমাদের প্রচার ছিল ‘আপনার অমূল্য ভোট নষ্ট করবেন না। রাষ্ট্রহিতে সঠিক জায়গায় নিজের ভোট নিজে ভোট দিন। নিজের বুথে একশো শতাংশ ভোটদান হলে গণতন্ত্র রক্ষা হব’। মানুষ বুঝেছেন ভোটদান গণতান্ত্রিক অধিকার। তাই দশ বছরে নোটার হারও কমেছে।’’
কিন্তু ‘নোটায় না’-তে সাড়া মিললেও ঝাড়গ্রামে বিজেপি হেরেছে। বিজেপি প্রার্থী প্রণত টুডুর হার সম্পর্কে সঙ্ঘের পর্যবেক্ষণ, রাষ্ট্রবাদী সরকার গঠনের স্বার্থে সঙ্ঘ প্রচার করলেও গ্রামীণ মহিলাদের ভোট টানার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে বিজেপি ব্যর্থ হয়েছে। বিজেপিতে উপযুক্ত জনজাতি নেতা নেই। বিজেপি জনজাতিদের জন্য কি করেছে সেটা তাঁদের বোঝানো যায়নি। যার ফলে জনজাতি ভোট তৃণমূলের দিকে গিয়েছে। অনুরূপভাবে কুড়মি ভোটও বিজেপির দিকে তেমন আসেনি। বিজেপি জেনারেল ও শিক্ষিত মানুষের ভোট পেয়েছে। যে কারণে শহর ও শহরতলিতে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। রাজ্যের পরিষেবা প্রাপকরা তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। আবার জাতিসত্তার ভিত্তিতে জনমত সংগঠিত করতে না পারাটাও বিজেপির বিরুদ্ধে গিয়েছে।