বিক্রম ব্যানার্জী: আমেরিকায়(America) ভারতীয় যুবকের রহস্য মৃত্যু। সূত্রের খবর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স উৎপাদনকারী কোম্পানি ওপেন এআইয়ের প্রাক্তন কর্মী ছিলেন ওই যুবক। জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির বেশ কিছু দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করেছিলেন ওই ভারতীয় তরুণ। এরপরই ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকো শহরের বুচানন স্ট্রিটের নিজস্ব ফ্ল্যাট থেকে যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে আমেরিকান(America) পুলিশ।
বেশ কিছু আমেরিকান সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, আমেরিকার বাসিন্দা ওই ভারতীয় তরুণের নাম সুচির বালাজি। জানা যায়, 26 বছর বয়সী ওই তরুণের মৃতদেহ গত 26 নভেম্বর উদ্ধার করে পুলিশ। তবে সেই খবর যাতে পাঁচ কান না হয় তার জন্য বিষয়টি একেবারে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে অবশেষে প্রকাশ্যে এলো সেই তথ্য। কিন্তু কীভাবে ওই ভারতীয় যুবকের মৃত্যু হয়েছে সেই বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে কোনও রকম তথ্য দেয়নি পুলিশ।
অনেকেই ধারণা করছেন ওপেন এআইতে কর্মরত অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির দুর্নীতির খবর ফাঁস করেছিলেন তিনি। সেই কারণেই হয়তো যুবককে খুন হতে হলো। যদিও সান ফ্রান্সিসকো পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, নিউজ চ্যানেলগুলিকে জানানোর মতো কোনও তথ্য এই মুহূর্তে পুলিশের হাতে এসে পৌঁছয়নি। তবে পুলিশের তরফে সেভাবে কোনও তথ্য না পাওয়া গেলেও ভারতীয় যুবকের মৃত্যুর নেপথ্যে বারংবার প্রশ্ন উঠছে তার প্রাক্তন কোম্পানির হস্তক্ষেপ নিয়েই।
আমেরিকার অন্যতম আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওপেন এআই। যা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংস্থাগুলির মধ্যে একটি। গোটা বিশ্বে মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত জনপ্রিয় এআই চ্যাট জিপিটির প্রস্তুতকারকও এই সংস্থাই। আর সেখানেই 2020 থেকে 2024 সাল পর্যন্ত দীর্ঘ কর্মজীবন কাটিয়েছেন ওই ভারতীয় তরুণ। তবে গত আগস্টে হঠাৎই কোম্পানিকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেন বালাজি। সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত চ্যাট জিপিটি প্রস্তুত থেকে শুরু করে তা বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিমুহূর্তে আমেরিকায় কপিরাইট আইন লঙ্ঘন করছে ওপেন এআই।’
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বালাজি আরও বলেন, ‘আপনি যদি ওপেন এআইয়ে কাজ করতে, সেক্ষেত্রে আমি যা জানি তা যদি আপনার জানা থাকতো তাহলে নিশ্চিতভাবে আপনি সেই সংস্থা ত্যাগ করতেন। আমিও সেটাই করেছি। তারা যেভাবে ব্যবসা করছে তা কিছুতেই ইন্টারনেট ইকোসিস্টেমে গ্রহণযোগ্য নয়।’ এই সাক্ষাৎকারের পর থেকেই ভারতীয় তরুণের ভিন্ন মূর্তি দেখেন নেট নাগরিকরা। বিভিন্ন সময়ে নিজের সমাজ মাধ্যম অ্যাকাউন্ট থেকে চ্যাট জিপিটির যথেচ্ছ অপব্যবহার নিয়ে সরব হন সুচির বালাজি। অন্তিম পোস্টেও একই কথাই আউড়েছিলেন তিনি। তবে সংস্থার বিরুদ্ধে সরব হওয়ার পরই তার মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে জল্পনা। যদিও প্রাক্তন কর্মীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ওপেন এআইয়র এক মুখপাত্র।